ঢাকা, সোমবার ২৫, নভেম্বর ২০২৪ ৮:৪৬:২০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ ১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই প্রিয়াঙ্কার বাজিমাত বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস

অদক্ষ নারীদের দক্ষ করে তুলতে চান মাকসুদা 

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:০৩ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০২১ বুধবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখে। কারো পূরণ হয়। কারো হয় না। শুধু স্বপ্ন দেখা নয়, বাস্তবায়নে করতে হয় অক্লান্ত পরিশ্রম। অন্য পাঁচটা স্বপ্নবাজ মেয়ের মতো মাকসুদা খাতুনও স্বপ্ন দেখতেন নিজে কিছু একটা করার। সব সময় তার মনে প্রবল আগ্রহ ছিল নিজ উদ্যোগেই কিছু একটা করে স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ার। মাকসুদার সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে।

নিজের জমানো অর্থ ও গহনা বিক্রির টাকা দিয়ে ২০১৬ সালে ব্যবসা শুরু করেন ঢাকার মেয়ে মাকসুদা খাতুন। তার ‘শাবাব লেদার’ নামের প্রতিষ্ঠানটিতে প্রথমে পাঁচজন শ্রমিক থাকলেও বর্তমানে কাজ করছেন অর্ধশতাধিক শ্রমিক। শুরুতে দুটি মডেলের চামড়ার লং জেন্টস ওয়ালেট বানালেও বর্তমানে তার ফ্যাক্টরিতে তৈরি হচ্ছে এক্সিকিউটিভ ব্যাগ, এক্সিকিউটিভ ফাইল, লেডিস ব্যাগ, মেসেঞ্জার ব্যাগ, লেডিস পার্স, ব্যাকপ্যাক, বেল্ট, মাউস প্যাড, চাবির রিং, করপোরেট গিফট আইটেম, পেন হোল্ডার, পেন স্ট্যান্ড, ডায়েরি কভার, জ্যাকেটসহ যাবতীয় ।


আট দেশে যায় নারী উদ্যোক্তা মাকসুদার চামড়াজাত পণ্য
মাকসুদা বলেন, বর্তমানে সুইজারল্যান্ড, ইতালি, গ্রিসসহ আট দেশে আমার পণ্য যায়। নিজেরা তৈরির পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট লাগেজ, কারুপণ্যসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছি। এছাড়া করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে সাপোর্ট দিচ্ছি। করোনা-পরবর্তী সময়ে আমরা অনলাইনে ব্যাপক রেসপন্স পেয়েছি। দারাজ, দেশিবেশিসহ বেশকিছু ই-কমার্স প্লাটফর্মে আমাদের পণ্য পাওয়া যায়। এছাড়া এফ-কমার্সেও আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।

উচ্চশিক্ষা শেষে শিক্ষকতা পেশায় মনোনিবেশ করেছিলেন মাকসুদা। তবে সবসময়ই নিজে কিছু করার আগ্রহ ছিল তার। মাকসুদার স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পাশাপাশি পার্টনারশিপে চামড়াজাত পণ্য রফতানি করছিলেন। এক পর্যায়ে শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে স্বামীর ব্যবসার হাল ধরেন মাকসুদা। নানা জটিলতায় লোকসান হতে থাকায় বন্ধ হয়ে যায় স্বামীর ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সেই সময় প্রায় ৭০ লাখ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় আসে মাকসুদা দম্পতির। তাতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মাকসুদার স্বামী। নিজে শক্ত থেকে ব্যবসা দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেন মাকসুদা। প্রথমে নিজেই বিভিন্ন দোকানে উৎপাদিত পণ্যের বিপণন শুরু করেন।

মাকসুদা বলেন, ঋণের পরিমাণটা এতো ছিল যে; আমি বুঝতে পারি চাকরি করে এটা পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তখন ব্যবসাটা মোটামুটি আয়ত্ত করে ফেলেছি। পুরোনো কিছু যন্ত্রপাতি কিনে শুরু করি। বুঝতে পারছিলাম নিজের পরিবারের জন্য কিছু করতে হবে। ঋণ শোধ করতে হবে। তা না হলে দুদিন পরে জেলে যেতে হবে। কেরানীগঞ্জে একটি ফ্ল্যাট, কিছু গহনা বিক্রি ও ডিপিএস ভেঙে কিছু ঋণ শোধ করলাম। প্রায় ১০ লাখ পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। এখন প্রায় ৩০টির মতো শোরুমে আমার পণ্য যাচ্ছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে একটি শোরুম নিয়েছি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফুটওয়্যার বিজনেস শুরু করেছি। এছাড়া বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ‘প্রেসিডেন্ট’-এ আমার পণ্য যাচ্ছে। ব্যাংক-বীমাসহ আটটা করপোরেট প্রতিষ্ঠানে শাবাব লেদার সাপোর্ট দিয়ে থাকে। আরও কয়েকটিতে কথা বলছি।

তিনি বলেন, শুধু পুরুষরাই নারীদের জায়গা করে দেবে, তা নয়। নারীদের নিজের জন্য পরিচয় তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করতে হবে।

নিজে সৎ থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্যে সব বাধাই অতিক্রম করা যায় জানিয়ে তিনি বলেন, সব ধরনের লাইসেন্স, পেপার— সবকিছু আমি দ্রুত করতে পেরেছি। সেসব সমস্যা অন্য সব উদ্যোক্তা ফেইস করেন, আমিও সেসব ঘটনা ফেইস করেছি।

এই উদ্যোক্তা বর্তমানে ওমেন এন্ট্রাপ্রেনিউর বাংলাদেশ, ওমেন এন্ট্রাপ্রেনিউর, নতুন প্রজন্ম, চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, বিসিক, এসএমই ফাউন্ডেশনসহ বেশকিছু সংস্থার সঙ্গেও কাজ করছেন।